শেষের সেদিন
-সুনির্মল বসু
শরতের সকালে যেভাবে শিউলি তলা থেকে ছোটবেলায় ফুল কুড়িয়ে নিতাম, সেভাবেই জীবনের অস্তাচল পর্বে ভালোবাসা কুড়িয়ে নিতে চাই দুহাত ভরে,
কে কিভাবে অন্যকে বঞ্চিত করে বৈভবের অহংকারে আত্মশ্লাঘা প্রকাশ করল, সেদিকে ফিরেও তাকাতে চাই না, সঙ্গে করে কিছু আনিনি, সঙ্গে করে কিছু নিয়ে যেতেও পারব না,
আকাশ এত মুগ্ধতা দিল, সমুদ্র দিগন্ত থেকে দিগন্তের দিকে ছুটে গেল, ভোর বেলায় ফুলের সম্ভার চুপিচুপি ভালোবাসার কথা বলে গেল,
খালের জলে, বিলের ওপর, নদীর উতরোল ঢেউয়ে
প্রতিদিন কত ভালোবাসার কথা লেখা হলো,
চাঁদের মালা পরা রাত, বর্ষণমুখর মেঘমেদুর আকাশ
বৃষ্টি হয়ে ভালোবাসা হয়ে পৃথিবীর উপর ঝরে পড়ল,
ইত্যাকার ভালোবাসার মধ্যে ঈশ্বরের ইচ্ছা প্রতিদিন
মানুষকে কত কি শেখায়,
অথচ বেড়ে চালাক মানুষ কিছু শিখল না,
পৃথিবীটাকে ভাঙতে ভাঙতে ভাঙতে ভাঙতে ক্রমশ ছোট করে ফেললো,
দ্যাখো আমি বাড়ছি, দ্যাখো আমি উঠছি,
ওঠা নামার তফাৎটা আজকাল বোঝেন না অনেকেই, অথচ বিজ্ঞভাব, অন্যকে ঠকানো সহজ,
নিজে যে কবে থেকে হেরে ভূত হয়ে বসে আছেন,
সেটা টের পেতে জীবন চলে যায়,
জীবনের শেষ স্টেশন এসে পড়ে,
উত্তর পুরুষের ভাবী জীবনে অশান্তি আনবার জন্য
লোক ঠকানো সম্পদ জীবনকে বিষ জর্জরিত করে,
সেদিন নিজের অহংকারী মুখটা নিজেকেই ক্রমাগত
ঠাট্টা করে যায়।